মায়োপিয়া দূর করার সহজ উপায় । চোখের মায়োপিয়া
স্বল্প দৃষ্টি বা ক্ষীণ দৃষ্টিকে মায়োপিয়া বলে। চোখের এই সমস্যাটির ফলে আপনি অনেক দূরের বস্তু স্পষ্টভাবে বা সুন্দরভাবে দেখতে পান না বা চোখে ঘোলাটে দেখেন।তাই চোখ অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়। (মায়োপিয়া দূর করার সহজ উপায় )
এটি খুবই বড় যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা। যদি মায়োপিয়ার চিকিৎসা করা না হয় তাবে চোখের রেটিনার ক্ষতি হয় এবং স্থায়ীভাবে দৃষ্টিহীন হওয়ার অনেক সম্ভাবনাও শুরু হতে পারে। ঘরোয়া বা বাড়িয়া কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে আপনার মায়োপিয়ার প্রকোপ কমানো যেতে পারে। আসুন তাহলে সেই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।(মায়োপিয়া দূর করার সহজ উপায় )
না।চশমা আপনার চোখেকে পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে সক্ষম না। যদিও মায়োপিকদের কাছে চশমাই হালো প্রথম সমাধান।তবে একটানা চশমা পরে থাকলে সমস্যাটি বড় হতে পারে।
বিভিন্ন ফুলের ছবি ডাউনলোড করুন । ফুলের ছবি
দূরের জিনিস দেখতে না পেলে কাছে গিয়ে দেখতে হয়। চশমার প্রতি নির্ভরশীলতা কমানো উচিত।সারাক্ষণ চশমা পরে থাকলে পাওয়ার কমে না বরং বাড়ে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। সঠিক নিয়ম মেনে আপনি চশমা ব্যবহার করুন।(মায়োপিয়া দূর করার সহজ উপায় )
চোখে হাওয়া লাগান,প্রকৃতি দেখুন,চোখের বযায়াম করুন,ভালো শাক সবজি খান। এগুলো চোখের সমস্যাকে অনেক খানি বা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করবে। অব্যশই যখন প্রয়োজন তখন চশমা পরাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
মায়োপিয়া দূর করার সহজ উপায়
১। প্রথম হলো চোখের ব্যায়াম
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালের অপথালমোলজি বিভাগের গবেষণার মতে আমরা জানতে পারি যে, চোখের ব্যায়াম মায়োপিয়ার সমস্যার উপর অনেক খানি প্রভাব ফেলে। বর্তমানে চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বা ডাক্তাররা ঔষধ ও চশমা ব্যবহারের পাশাপাশি চোখের ব্যায়াম করারও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নিয়মিত ইয়োগাও করতে পারেন।(মায়োপিয়া দূর করার সহজ উপায় )
২।প্রাণায়াম বা দমচর্চা
নিয়মিত দমচর্চা করা মায়োপিয়ার প্রতিকারে অনেক খানি সাহায্য করে। রিলেক্সভাবে বা আরামভাবে এক জায়গায় বসে গভীরভাবে আপনার নাক দিয়ে শ্বাস নিন এবং আপনার মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। এভাবে প্রতিদিন ৩ মিনিট যাবত দমচর্চা করুন ।
৩। ভিটামিন গ্রহণ করুন
মায়োপিয়া প্রতিকারের একটি প্রধান উপায় হচ্ছে ভিটামিন গ্রহণ করা। বিশেষ করে ভিটামিন বি,এ, ই, ডি এবং ভিটামিন সি এর সাথে ভালো দৃষ্টিশক্তির সম্পর্ক কিন্তু খুবই গভীর। এই ভিটামিনগুলোর উৎস হচ্ছে- আপেল, মরিচ, গাজর, টমাটো, মাছ, সবুজ শাকসবজি, শুষ্কফল এবং বাদাম। ভিটামিন সমৃদ্ধ এই খাবারগুলো নিয়মিত ভাবে আপনি খাওয়ার চেষ্টা করুন।(মায়োপিয়া দূর করার উপায়)
৪। ত্রিফলা
আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় বিভিন্ন রকম উপায় বর্ণনা করা হয়েছে যা চোখের রোগ নিরাময়ের জন্য খুবই উপকারি। বহেড়া, বঁইচি ও আমলকী একসাথে মিশিয়ে ত্রিফলা তৈরি করা যায়। ত্রিফলা আয়ুর্বেদ ঔষধগুলো দোকানে কিনতে পাওয়া যায় কিংবা আপনি বাসাতেও তৈরি করে নিতে পারেন। ত্রিফলার মিশ্রণ চোখের পেশীকে অনেক শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত পান করলে মায়োপিয়ার সমস্যা নিরাময়ে অত্যন্ত উপকারী ভূমিকা রাখে। ২ কাপ ফুটানো ও ঠান্ডা পানিতে ১ আউন্স ত্রিফলার নির্যাস মিশিয়ে সকালে ও বিকালে চোখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে পারেন।
৫। বিরতি নিন
বিভিন্ন ফুলের ছবি ডাউনলোড করুন । ফুলের ছবি
একটানা পড়াশনা করা, বেশি টিভি দেখা বা কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ কাজ করার ফলে অল্প দূরত্বে চোখের ফোকাস করার প্রয়োজন পড়ে ফলে মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। তাই এই কাজগুলো করার সময় মায়োপিয়া হওয়া থেকে এড়াতে বা এর তীব্রতা কমানোর জন্য কিছুক্ষণ পর পর আপনার বিরতি নেয়া উচিৎ। (মায়োপিয়া দূর করার উপায়)
৬। পর্যাপ্ত আলোতে কাজ করা
কম আলোতে কাজ করলে দৃষ্টিশক্তির উপর মারাত্মক ভাবে প্রভাব পড়ে। এর কারণ হলো কম আলোতে কাজ করার সময় চোখের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। ফলে চোখের পেশীতে টান পড়ে এবং মায়োপিয়া বা ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা সৃষ্টি হওয়া শুরু হয়।(মায়োপিয়া দূর করার উপায়)
৭। সূর্যোদয় দেখুন
প্রায় প্রতিদিন সকালে ৫-৬ মিনিট সূর্যোদয় দেখা মায়োপিয়া নিরাময়ের জন্য খুবই উপকারী। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আপনি হাঁটতে বেরিয়ে পড়ুন। হাঁটা আপনার সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী আর সূর্যোদয় দেখা আপনার চোখের জন্য বিশেষ করে মায়োপিয়ার জন্য খুবই উপকারী ভূমিকা বা অবদান রাখে।
৮। উষ্ণতা
দুই হাতের তালু কিছুক্ষণ ঘষে নিয়ে দুই চোখের উপর হালকাভাবে চেপে ধরুন। দিনের যেকোন সময় এটি করতে পারেন। যখনই স্ট্রেস অনুভব করবেন তখন কাজ থেকে কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে এই সহজ এক্সারসাইজটি করুন। এতে আপনার চোখ পুনরুজ্জীবিত হবে।
মায়োপিয়া কেনো হয়?
বেশ কয়েকটি কারণে একজন শিশু মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। কারণগুলো হলো-
১। প্রথম হলো জীনগত সমস্যা
বংশে কারও মায়োপিয়ার সমস্যা থেকে থাকলে সেটি জিনের মাধ্যমে শিশুর মধ্যে পরিবাহিত হয়ে যেতে পারে। তবে অসুস্থতার প্রকাশ কখনো ছোটবেলায়ও হতে পারে, আবার কখনো বড় হওয়ার পরেও দেখা যেতে পারে।
২। বাইরে না যাওয়া
গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব শিশু দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বা বেলা ঘরের বাইরে গিয়ে সময় কাটায়, তাদের মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। মূলত, বাইরের প্রাকৃতিক আলোও সাধারনত মায়োপিয়া কমে যাওয়ার মধ্যে কোনো সম্পর্ক রয়েছে বলে অনেক সময় মনে করা হয় ।(মায়োপিয়া দূর করার উপায়)
৩। প্রযুক্তির ব্যবহার
প্রযুক্তির নানা পণ্য আমরা সবসময় ব্যবহার করি। এর মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন আর ল্যাপটপও। এই জিনিসগুলো চোখের খুব কাছে এনে দেখলে বা ব্যবহার করলে মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।(মায়োপিয়া দূর করার উপায়)