চিনা বাদামের কত ক্যালরি হয় | চিনা বাদামের উপকারিতা *সকল তথ্য*

 চিনা বাদাম হল একটি মুখরোচক ভালো স্ন্যাকস। চিনা বাদামে ক্যালরি  অনেক পাওয়া যায়। যা সবাই খেতে পছন্দ করে। এই বাদামটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নামে পরিচিত বিভিন্ন জায়গায়। 

যেমন-তেলেগু ভাষায় ‘পাললেউ’,তামিল ভাষায় ‘কাদালাই’, কানাডায় ‘কাদালে কৈাই’,হিন্দিতে ‘মুঙ্গফালী‘, মালয়ালামে ‘নিলাক্কাদালা’, নামে পরিচিত।

চিনা বাদামের কত ক্যালরি?

চিনা বাদাম ছোট হলেও সকল প্রকার খাদ্য গুণাগুণ এই স্ন্যাকসে বর্তমান। যেমন-  কার্বোহাইড্রেট, লিউটিন,ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, জিজ্যানথিনের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। চিনা বাদাম এর ক্যালরি হিসাব করা একদম সহজ।

এক’শ গ্রাম চিনা বাদাম থেকে আমরা পাই, ২.৯ গ্রাম খনিজ, ১.৭ গ্রাম আশ, খাদ্যশক্তি কিলো ক্যালোরি ৬৫৫, প্রটিন ২০.৮ গ্রাম,  শর্করা ১০.৫ গ্রাম,তেল ৫৮.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৩০ মিলি গ্রাম ও লৌহ .৫ মিলি গ্রাম খাদ্যগুণ পাওয়া যায়।

সহজ গরুর রচনা


চিনা বাদামের  ক্যালরি ও অন্যান্য হিসাব

  1. ক্যালরি (৫৬৭)
  2. প্রোটিন (২৫.৮ গ্রাম)
  3. জল (৭ শতাংশ)
  4. ফ্যাট (৪৯.২ গ্রাম)
  5. আয়রন (৪.৫৮ মিলিগ্রাম)
  6. সোডিয়াম (১৮ মিলিগ্রাম)
  7. ক্যালসিয়াম (৯২ মিলিগ্রাম)
  8. ম্যাগনেসিয়াম (১৬৮ মিলিগ্রাম)
  9. ওমেগা -৬ (১৫.৫৬ গ্রাম)
  10. ভিটামিন ই (৫৫ শতাংশ)
  11. চিনি (৪.৭ গ্রাম)
  12. কার্বোহাইড্রেট (১৬.১ গ্রাম)
  13. ফাইবার (৮.৫ গ্রাম)
  14. পটাসিয়াম (৭০৫ মিলিগ্রাম)

কোন কোন উপাদার কি কি উপকার করে


ক্যালরি:

দেহের শক্তির উৎস ক্যালরি। আমাদের দেহে শক্তির জোগান দেয়।


কার্বোহাইড্রেট:

কার্বোহাইড্রেটগুলি আমাদের দেহে গ্লুকোজ হিসাবে দ্রুত রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে। স্বাস্থ্যকর ওজন এবং জীবনধারা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


ফাইবারঃ

হজম স্বাস্থ্য এবং নিয়মিত অন্ত্রের জন্য ফাইবার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কোলেস্টেরল উন্নত করতে পারে। এটি ডায়াবেটিস, অন্ত্রের ক্যান্সার রোগের জন্য উপকার।

আরো জানতে হলে এখানে ক্লিক করুন

প্রোটিনঃ

প্রোটিন আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন ছাড়া আমাদের শরীরের ত্বক, চুল, নখ, হাড় কিছুই বিকাশ অসম্ভব। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে প্রতিরক্ষা করে।


ফ্যাটঃ

ফ্যাট আমাদের ডায়েটের একটি অপরিহার্য অঙ্গ এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরণের চর্বি রয়েছে, কিছু ফ্যাট অন্যদের চেয়ে স্বাস্থ্যকর থাকে।


ওমেগা -৬ঃ

লোকেরা যদি পর্যাপ্ত ওমেগা -6 ফ্যাটি অ্যাসিড না খায় তবে কোষগুলি সঠিকভাবে কাজ করবে না।


ভিটামিন ই:

ভিটামিন ই শরীরের অনেক অঙ্গের সঠিক ক্রিয়াকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন। এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও। এর অর্থ এটি কোষের ক্ষতিগ্রস্থ প্রক্রিয়াগুলি ধীর করতে সহায়তা করে।


ক্যালসিয়ামঃ

শরীরের হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে।


আয়রনঃ

নিমিয়া রোগের জন্য উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি করে।


ম্যাগনেসিয়ামঃ

সুগারের রোগীদের জন্য উপকারি এবং হাড় মজবুত রাখে। হৃদরোগ থেকে রক্ষা করার জন্য উপকৃত।


পটাসিয়ামঃ

রক্তচাপ সঠিকভাবে বজায় থাকে এবং এটি পেশী শক্তিশালী করে।


সোডিয়ামঃ

মস্তিষ্কের কাজ, রক্ত, হৃদয় ইত্যাদির জন্য উপকারী। আমাদের দেহে সঠিক পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।


চিনা বাদাম এর উপকারিতা


  • রাতে ১০-১৫ টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস নির্মূলে বিশেষভাবে কার্যকরী।👀👀👀
  • এছাড়া চিনা বাদাম রক্ত থেকে সুক্রোজের মাত্রা কমায়।👍👍👍

  • চিনা বাদামে প্রচুর পরিমাণ বি৩ আছে যা মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। কিছু কিছু মানুষের স্মৃতিশক্তি তুলনামূলকভাবে অন্যদের চেয়ে কম। খুব অল্প বয়সেই অনেকেই ভুগছেন মস্তিষ্কের সমস্যায়। ভুলে যাচ্ছেন সামান্য বিষয় এবং অনেক চেষ্টা করেও মনে রাখতে পারছেন না। এমনটা হয় যখন আমাদের মস্তিস্ক ভালো পরিমাণমতো পুষ্টি পায় না। একে মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে গন্য করা যায়। চিনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে বি৩ আছে যা মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। তাই প্রতিদিন চিনা বাদাম বা এর মাখন খাবেন, যাতে করে আপনি স্বয়ংক্রিয় মস্তিস্ক পেতে পারেন।

  • শরীরের মাত্রাধিক কোলেস্টেরল হৃদরোগ, উচ্চ রক্ত চাপ, ওজন বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিস এর মতো কঠিন রোগ সৃষ্টি করে। বাদামের অসাধারণ কার্যকরী ফ্যাট শরীর থেকে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া, এই বাদাম শরীরের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন একমুঠো চিনা বাদাম খেতে পারেন শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে।
  • প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একমুঠো বাদাম যুক্ত করে আপনি অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। তাছাড়া এটি আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।

  • শরীরে সঠিক পরিমাণ পুষ্টি না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে কঠিন রোগকে বাসা বাধতে বাঁধা দান করে। তাই প্রতিদিন চিনা বাদাম খেয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।
You can Know Here More

চিনা বাদাম খাওয়ার নিয়ম


  • বাদাম খেয়ে পানি খেতে নেই। ছোটবেলা থেকে এই কথাটা শুনে বড় হয়েছি আমরা। বিশেষ করে চীনা বাদাম। কেন বাদাম খাওয়ার পর পানি খেতে বারণ করা হয় সে বিষয়ে যদিও স্পষ্ট ধারণা নেই আমাদের। 


  • চিকিৎসকরা বলেন, চীনা বাদাম শরীর গরম করে। তাই সাধারণত শীতকালেই চীনা বাদাম বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। বাদাম খেলে শরীরে যে তাপ উৎপন্ন হয় পানি তা ঠান্ডা করে দেয়। বাদাম খেতে খেতে পানি খেলে তাই সর্দি-গর্মি লেগে যেতে পারে। 

  • আবার বাদামে যেহেতু তেল থাকে তাই তারপর পানি খেলে খাদ্যনালীতে ফ্যাট জমা হয়। ফলে কাশি হয়। বাচ্চারা বাদাম খাওয়ার পর পানি খেলে হজমে সমস্যা হয়। আবার অনেক সময় বাদামে অ্যালার্জির কারণে গলায় চুলকানির সমস্যাও হতে পারে। তখন পানি খেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যেতে পারে।

কাঁচা চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা


কাঁচা চিনা বাদাম কোলন স্তন ক্যান্সার,ক্যান্সার ও হার্টের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা হাড় গঠনে সাহায্য করে। বাদামে রয়েছে প্রচুর আয়রন, যা রক্তে লোহিতকণিকার কার্যক্রমে সহায়তা করে। বাদামের ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিন চুল ও ত্বক সুন্দর রাখে। ত্বকে বলিরেখা বিলম্বিত করে।


ভাজা চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা


খারাপ কোলেস্টেরল কমায় : চীনা বাদামে রয়েছে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। এছাড়াও ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে থাকে। চিনা বাদামের তেলের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভালো কোলেস্টেরল।

উপকারী চর্বির উৎস : চীনা বাদামে রয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ ফ্যাট। যার মধ্যে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। এই চর্বিগুলো মানুষের শরীরের জন্য উপকারী।

পাকস্থলী ক্যান্সার রোধ করে : বাদামে বিদ্যমান পলিফেনোলিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাকস্থলী ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : পুষ্টির অভাবজনিত রোগব্যাধিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়াও কাশি, সর্দি জ্বর মাথা ব্যাথা ও শারীরিক দুর্বলতা কমাতে ভূমিকা রাখে।

ত্বক উজ্জ্বল করে : বাদামে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফাইবার এবং চর্বি যা নিয়মিত খেলে শরীরের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। শরীরে জমে থাকা বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করে যার কারণে ত্বক উজ্জ্বল হয়।

চুলের পুষ্টি জোগায় : বাদামে বিদ্যমান ভিটামিন ই চুলকে উজ্জ্বল করে এবং মোটা করে।

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : বাদামে বিদ্যমান বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিশেষ করে ওমেগা থ্রি ও সিক্স মস্তিষ্ক কে শক্তিশালী হতে সহায়তা করে।

শরীরের ওজন কমায় : বাদামে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফ্যাট ও ক্যালরি। বাদাম খেলে পেটে খাদ্য চাহিদা কমে যায়। যার ফলে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণে অনীহা আসে ফলে খদ্য কম গ্রহন করে এবং ওজন কমে থাকে। তাছাড়াও উপকারী চর্বি থাকায় তা শরীরে মেদ হিসাবে জমতে পারে না।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : বাদামে রয়েছে প্রায় ৫০% উপকারী তেল বা চর্বি। এছাড়াও রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, নায়াসিন, কপার, অলীক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।


উচ্চমাত্রার আমিষের উৎস : বাদাম একটি উচ্চমাত্রার আমিষের উৎস। ১০০ গ্রাম বাদামে ২৬ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে । আপনারা নিশ্চয় জানেন আমি শরীরের মাংসপেশি গঠনে ভূমিকা রাখে।একজন পূর্ণবয়স্ক নারী প্রতিদিন ৪৬ গ্রাম এবং পুরুষের ৫৬ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। এছাড়াও ১৫০০ মিলিগ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করা উচিত।


হাড়ের ক্ষয় রোগ বন্ধ করে : প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় বাদাম থাকলে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।

চিনা বাদামের দাম


সাধারণত ফুটপাতে যে বাদাম পাওয়া যায় সেটার দাম সবচেয়ে কম এবং লো কোয়ালিটি। ছোকলাসহ চিনা বাদাম এখন বিক্রয় হচ্ছে ১২০-১০০ টাকা দামে। ১৫০-১৬০ টাকা খোসা ছাড়ানো বাদাম দোকানে বিক্রয় হচ্ছে যার ১৮-২০ % বাদামই মিক্সা এবং পঁচা। চিনা বাদাম দেশি এবং ফ্রেশ টা ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম আছে।

১০০ গ্রাম চিনা বাদামে কত ক্যালরি


১০০ গ্রাম চিনা বাদামে সাধারণত ক্যালরি হয়। তা জানতে হলে উপরে পড়ুন।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url