কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা সবাই কম বেশি শাক পছন্দ করি। তার মধ্যে কলমি শাক সবার প্রিয়। এই শাকে প্রচুর গুণাগুন রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই কলমি শাক বা কলমিশাক পছন্দ করি না। তাদের জন্য আজকে আমরা নিয়ে এসেছি
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা এ পোস্টটি। চলুন দেখি আসি কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছু কথা।
সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত শাক খাওয়ার বিকল্প নেই। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকা যায় শাক খেলে। জেনে নিন কোন শাকের কী উপকারিতা
কলমি শাক বা কলমিশাক এর বৈশিষ্ট ও উপকারিতা ও অপকারিতা
কলমি শাক সাধারণত ভেজা মাটিতে বা পানিতে হয়ে থাকে। কলমি শাকের ডাঁটাগুলো সাধারণত দুই থেকে তিন মিটার বা আরো বেশি দীর্ঘ হয়। ডাঁটার গিঁট থেকে শেকড় অনেক বের হয়।কলমি শাকের ডাটা ফাঁপা হওয়াই এই শাক পানির উপরে সাধারণত ভেসে থাকতে পারে। কলমি শাকের পাতা অনেকটা লম্বাটে ত্রিকোণাকার মত হয়ে থাকে সাধারণত, এবং ৫ থেকে ১৫ সেমি দীর্ঘ হয় এবং ২ থেকে ৮ সেমি চওড়া হয়ে থাকে সাধারণত। কলমির ফুল সাধারণত ট্রাম্পেট আকৃতির মতো। ফুলের রঙ হয় সাদা এবং গোড়ার দিকটা হয় বেগুনি।
কলমিশাকে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ । কলমি শাক স্বল্পমুল্যে ও সব জায়গায় পাওয়া যায় ।
কলমি শাকের ফুলে বীজ হয়, আর এই বীজ থেকেও গাছ লাগানো যায়।
কলমি শাকে রয়েছে লোহা ,ক্যালসিয়াম, ও অন্যান্য পুষ্টিগুন । এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি , ভিটামিন সি,ভিটামিন এ।
কলমি শাকে ভিটামিন বি-১ রয়েছে প্রচুর পরিমানে যা কচুশাক, পুঁইশাক, হেলেঞ্চা ও থানকুনির চেয়ে অনেক বেশি অর্থাৎ থায়ামিন রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।
কলমি শাকের উপকারিতা |
কলমি শাকের পুষ্টি ও উপকারিতা তথ্যঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাকের পুষ্টিমানঃ
- ক্যালোরি – ৩০ কিলো ক্যালোরি।
- আমিষ – ৩ ৯ গ্রাম,
- ক্যালসিয়াম – ০ ৭১ মিলিগ্রাম,
- থায়ামিন – ০ ৯ মিলিগ্রাম,
- নায়াসিন – ১ ৩ মিলিগ্রাম,
- লৌহ – ০ ৬ গ্রাম,
- পানি- ৮৯ ৭ গ্রাম,
- শ্বেতসার – ৪ ৪ গ্রাম,
- ভিটামিন সি – ৪৯ মিলিগ্রাম,
- আঁশ – ১ ৪ গ্রাম ।
কলমি শাকে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রসূতি ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য কলমিশাক সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কলমিশাকের কাণ্ডে ও পাতায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ সাধারণত থাকে। আঁশ আমাদের খাদ্য হজম করতে অনেক সাহায্য করে, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কলমিশাক খেলে শরীর সুস্থ রাখা ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করা যাবে ।
ছেলেদের রাগ ভাঙ্গানোর উপায় | ছেলেদের রাগ কমে যাবে
কলমিশাকে থাকা ভিটামিন বি-১ স্নায়ুতন্ত্রকে স্বাভাবিক ও সবল রাখতে সহায়তা করে। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে থাকে।
কলমিশাকে রয়েছে অনেক পরিমাণে ক্যারোটিন । এই ক্যারোটিন থেকে আমাদের শরিরে ভিটামিন-এ তৈরি হয়ে থাকে। ভিটামিন-এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
- ঘি এর সাথে কলমিশাকের রস মিশিয়ে সকাল ও বিকেলে নিয়মিত খেলে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
- মানবদেহে ফোড়া হলে কলমি শাকের পাতা ও একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারিপাশে লাগালে ফোড়া গলে যায় এবং পুঁজ বেরিয়ে ফোড়া শুকিয়ে যায় ।
- পোকামাকড় , পিঁপড়া কিংবা মৌমাছি কামড়ালে কলমি শাকের পাতা ডগা সহ রস করে, কামড়ানো স্থানে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়।
- কারো যদি কোষ্ঠ কাঠিন্য থাকে তাহলে কলমি শাকের কিছু পাতা বেটে রস করে ,আখের গুড়ে সঙ্গে মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল নিয়মিত এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
- আমাশয়ও রোগিদের জন্যও এ শরবত খুবই কার্য্যকরি ।
- কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরিরে যে পানি আসে এমন অবস্থায় তিন সপ্তাহ খাওয়ালে পানি কমে যায় ।
- কলমি শাকের দুই চামচ রস ,গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বাড়ে
- দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করতে সহায়তা করে কলমি শাকে থাকা ভিটামিন-সি । এ ছাড়াও ভিটামিন-সি সর্দি-কাশি ও ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।
প্রসূতি মায়েদের জন্য কলমিশাকঃ
শিশুরা যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বৃদ্ধি পায় ।
আপনি অপকারিতা সম্পর্কে কিছু জানাননি।